পুড়ে গেছে সৈকত শহর মালিবুর এক–তৃতীয়াংশ, লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে প্রাণহানি বেড়ে ১৬
Published: 12th, January 2025 GMT
দাবানলে পুড়ে গেছে লস অ্যাঞ্জেলেসের সৈকত শহর মালিবুর এক–তৃতীয়াংশ। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিজেদের মধ্যে এক বৈঠকে মালিবুর মেয়র ডগ স্টুয়ার্ট এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, তিন মাসের মধ্যে মালিবু তিনটি দাবানলের মুখোমুখি হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্যালেসেইডস দাবানল।
গত সপ্তাহ থেকে ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস।
দাবানলে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ১৬–তে দাঁড়িয়েছে বলে কয়েক ঘণ্টা আগে জানিয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের মেডিকেল এক্সামিনার কার্যালয় (মৃত্যুর তথ্যদানকারী স্বাস্থ্যবিষয়ক কার্যালয়)। তার মধ্যে পাসাডেনার কাছে ইটন দাবানলে ১১ জন এবং প্যালেসেইডস দাবানলে ৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা।
লস অ্যাঞ্জেলেস কর্তৃপক্ষ বর্তমানে নগরের চারপাশে প্রধান চারটি দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। সবচেয়ে বড় দাবানল প্যালেসেইডস। ক্যাল ফায়ার থেকে বলা হয়েছে, প্যালেসেইডস দাবানলটি ২৩ হাজার ৬৫৪ একর এলাকাজুড়ে জ্বলছে। এ দাবানলের ১১ শতাংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
দ্বিতীয় বড় আগুন জ্বলছে ইটনে। ১৪ হাজার ১১৮ একরজুড়ে জ্বলতে থাকা দাবানলের ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। কেনেথ দাবানল জ্বলছে ১ হাজার ৫২ একরজুড়ে। এটির ৯০ শতাংশই এখন নিয়ন্ত্রণে। আর হার্স্ট দাবানল জ্বলেছে ৭৯৯ একরজুড়ে। এটির ৭৬ শতাংশ এখন নিয়ন্ত্রণে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সৈকত শহর মালিবুর একাংশ দাবানলে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। ১০ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।