স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় আছে। বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।

উপদেষ্টা আজ রোববার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথাগুলো বলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ শুরু করেছে। বিজিবি ও স্থানীয় লোকজনের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত ওই সব স্থানে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বিজিবির সঙ্গে যূথবদ্ধ হয়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তিনি সীমান্তবর্তী জেলার অধিবাসীদের ধন্যবাদ জানান।

মো.

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সঙ্গে বিজিবির যোগাযোগ হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও এ বিষয়ে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে। তারা কূটনৈতিকভাবে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়া নিয়ে যেসব অসম সমঝোতা চুক্তি হয়েছে, সেগুলো বাতিলের বিষয়ে পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী মাসে (ফেব্রুয়ারিতে) বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ডিজি পর্যায়ে বৈঠক হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমানা নির্ধারণ ও উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন–সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মোট চারটি চুক্তি আছে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলি-১৯৭৫ অনুযায়ী উভয় দেশের শূন্যরেখা ১৫০ গজের মধ্যে প্রতিরক্ষা সামর্থ্যতা–সংবলিত যেকোনো কাজ সম্পন্নের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ছাড়া উভয় দেশের প্রয়োজনে শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্নের ক্ষেত্রে একে অপরের সম্মতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ৩ হাজার ২৭১ কিলোমিটার স্থানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে এবং ৮৮৫ কিলোমিটার স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা জানান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তে আমাদের প্রচুর শক্তি রয়েছে। বিজিবির সঙ্গে জনগণও কঠোরভাবে প্রতিহত করছে। কোনো বিরূপ ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতীয় হাইকমিশনকে বিষয়টি জানানো হবে।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম ও বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে হওয়া সব ধরনের অসম চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে। নয়াদিল্লিতে আসন্ন বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্তে হত্যা বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।

তিনি আরও বলেন, সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা, বর্ডার লাইনের ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া বা কোনো নির্মাণকাজ নিয়ম মেনে করা, ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ না করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেই কাঁটাতারের বেড়ায় এবার বাঁশ বাঁধল ভারতীয়রা, ভিডিও ভাইরাল
  • ভারতের সঙ্গে নরম সুরে কথা বলবে না বাংলাদেশ
  • অসম চুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • যেগুলোতে বঞ্চিত হয়েছি, সেগুলোতে ভারতকে ছাড় দেব না: বিজিবি মহাপরিচালক
  • সীমান্ত সম্মেলনে বাংলাদেশের ‘টোন’ হবে ভিন্ন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা