বিজিবির শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সীমান্তে বেড়া নির্মাণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 12th, January 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় আছে। বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।
উপদেষ্টা আজ রোববার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথাগুলো বলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ শুরু করেছে। বিজিবি ও স্থানীয় লোকজনের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত ওই সব স্থানে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বিজিবির সঙ্গে যূথবদ্ধ হয়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তিনি সীমান্তবর্তী জেলার অধিবাসীদের ধন্যবাদ জানান।
মো.
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়া নিয়ে যেসব অসম সমঝোতা চুক্তি হয়েছে, সেগুলো বাতিলের বিষয়ে পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী মাসে (ফেব্রুয়ারিতে) বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ডিজি পর্যায়ে বৈঠক হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমানা নির্ধারণ ও উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন–সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মোট চারটি চুক্তি আছে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলি-১৯৭৫ অনুযায়ী উভয় দেশের শূন্যরেখা ১৫০ গজের মধ্যে প্রতিরক্ষা সামর্থ্যতা–সংবলিত যেকোনো কাজ সম্পন্নের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ছাড়া উভয় দেশের প্রয়োজনে শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্নের ক্ষেত্রে একে অপরের সম্মতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ৩ হাজার ২৭১ কিলোমিটার স্থানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে এবং ৮৮৫ কিলোমিটার স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তে আমাদের প্রচুর শক্তি রয়েছে। বিজিবির সঙ্গে জনগণও কঠোরভাবে প্রতিহত করছে। কোনো বিরূপ ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতীয় হাইকমিশনকে বিষয়টি জানানো হবে।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম ও বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় একাধিক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলেও এ ব্যাপারে বিজিবির দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নিহত যুবক হলেন কসবার পুটিয়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে আল আমীন (৩২)।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কসবার পুটিয়া সীমান্তের ওপারে কয়েকজন যুবককে লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছুঁড়ে বিএসএফ। এতে আল আমীন নামে এক যুবক আহত হয়। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে ভারতের হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে শুক্রবার রাত ৯টায় মারা যান তিনি। মরদেহ বিএসএফ ক্যাম্পে রয়েছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদির ও কসবার বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারা আল আমীন নামের ওই যুবকের বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনাটি স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। তবে এ বিষয়ে বিজিবির সুলতানপুর ৬০ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।