রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়ার পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনায় গতকাল শনিবার থেকে এ পথে বাস চলাচল বন্ধ আছে। এতে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। আজ রোববারও রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কে আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ আছে।

আজ সকালে রাজবাড়ী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দুপুরে রাজবাড়ী শহরের মুরগির ফার্ম এলাকায় দুই জেলার পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে দুপুরের পর থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া পথে বাস চলাচল বন্ধ। রাজবাড়ী থেকে প্রায় ৫০টি আন্তজেলা ও ৩০টি দূরপাল্লার বাস সরাসরি চলাচল বন্ধ আছে। আন্তজেলা বাসগুলো রাজবাড়ী জেলার সীমান্তবর্তী পাংশার শিয়ালডাঙ্গা পর্যন্ত গিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার বাসগুলো জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় এসে যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে।

আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, বারবার বাস পরিবর্তন করায় যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। কুষ্টিয়ার দূরপাল্লার পরিবহন গতকাল বিকেলে বিকল্প রুট হিসেবে যমুনা সেতু ব্যবহার করে ঢাকায় গেলেও আজ কিছু গাড়ি সরাসরি যাচ্ছে। তবে রাজবাড়ীর কোনো পরিবহন সরাসরি কুষ্টিয়া যেতে পারছে না। এতে পরিবহনে যাত্রীসংখ্যা অনেক কমে গেছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ দূর করতে আলোচনার জন্য কুষ্টিয়া সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু তাঁরা সাড়া পাননি।

দুই দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রাজবাড়ী, ঢাকা, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরগামী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, থ্রি–হুইলার, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে লোকজন গন্তব্যে যাচ্ছেন। বাস চলাচলের বিষয়টি সমাধান না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের দহকুলা গ্রামের বাসিন্দা মামুন রেজা গত শুক্রবার গিয়েছিলেন মানিকগঞ্জে এক স্বজনের বাড়ি। আজ সকালে নদী পাড়ি দিয়ে তিনি দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১২০ টাকা দিয়ে থ্রি–হুইলারে পাংশায় আসেন। দুপুরে পাংশায় আলাপকালে মামুন রেজা বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে তিনি কুষ্টিয়া যাচ্ছেন। তাঁর মতো অনেকেই আজ বাড়তি টাকা খরচ করে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

পাংশা সরকারি কলেজের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার সাদিয়া ইসলাম বলেন, প্রতিদিন বাসে করে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে পাংশা কলেজে আসা–যাওয়া করেন। হঠাৎ করে বাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন। বাড়তি টাকা খরচ করে ভ্যানে করে যাচ্ছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইলন মাস্ক শিগগির দায়িত্ব ছাড়ছেন, বলেছেন ট্রাম্প

ইলন মাস্ক আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের জানিয়েছেন।

টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ককে নবগঠিত সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটা সরকারের সরাসরি কোনো অংশ নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও কর্মীবহর কমানো ছিল এই বিভাগের কাজ।

ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর পর মাস্কের পরামর্শে অনেকগুলো বড় বড় সিদ্ধান্ত নেন। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএইডি বন্ধ করা এবং লাখ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে অবসরে পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত দেশটিতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল।

ইলন মাস্কের সরে যাওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্টের ওই বক্তব্য সম্পর্কে অবগত তিনটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইলন মাস্ক এখন তাঁর ব্যবসায়িক কাজে ফিরে যাবেন। পাশাপাশি তিনি সরকারকে সহায়তার একটি ভূমিকা পালন করবেন।

মাস্ক ও তাঁর বিভাগের কার্যক্রম নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন ট্রাম্প। তবে সম্প্রতি দুজনেই এই বিষয়ে একমত হন যে, মাস্কের সরে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে।

ডিওজিইর দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে মাস্ক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। কিন্তু চঞ্চল মনোভাবের কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরের লোকজন এবং প্রশাসনের বাইরের অনেক মিত্র মাস্ককে অপছন্দ করা শুরু করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা ভারী হতে থাকে। অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ এই ধনীকে সম্পদের পরিবর্তে রাজনৈতিক দায় হিসেবে দেখতে শুরু করেন ট্রাম্পের দলের রাজনীতিবিদরা।

ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেও মাস্ক সম্ভবত প্রেসিডেন্টের অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। মাঝে–মধ্যে তাঁকে হয়তো হোয়াইট হাউসে দেখা যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ