শীতে যাঁদের বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন
Published: 12th, January 2025 GMT
কয়েকটি অসুখের ক্ষেত্রে শীতকালে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য তো বটেই; হৃদ্রোগ, পেরিফেরাল ভাসকুলার ডিজিজ, সিস্টেমিক স্ক্লেরোসিস বা রেনড সিনড্রমের রোগীদের জন্যও কিছু সতর্কতা অবশ্যই প্রয়োজন।
পেরিফেরাল ভাসকুলার ডিজিজডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কোলেস্টেরলের মাত্রা যাঁদের বেশি থাকে, তাঁদের পায়ে রক্ত চলাচল কম হয়। অনেকে পায়ে অবশ ভাব অথবা হাঁটাচলার পর পায়ে ব্যথা অনুভব করেন। সহজে পায়ের ক্ষত শুকাতে চায় না। ঠান্ডায় পায়ের রং পরিবর্তন হয় ও ব্যথা হয়।
রেনড ডিজিজকম বয়সী মেয়েদের প্রাথমিক পর্যায়ের রেনড ডিজিজ থাকতে পারে। শীতে বা ফ্রিজ ব্যবহার করলে হাত ব্যথা হয় ও রঙের পরিবর্তন হয়। মুখে জন্মনিরোধক ওষুধ খেলেও জটিলতা বাড়তে পারে। যাঁদের অস্থিসন্ধির ব্যথা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হাতে ঠিক এ রকম সমস্যা হলে তাঁকে সেকেন্ডারি রেনড সিনড্রম বলা হয়। হাত বা পায়ের এই ব্যথা যাঁদের হয়, তাঁদের উচিত বিটা ব্লকার ব্যবহার না করা। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার/ এনজিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম ইনহিবিটর/ এনজিওটেনসিন রিসেপ্টর ব্লকার/ আলফা এডরেনার্জিক ব্লকার ব্যবহার করা ভালো।
সতর্কতার জন্য এসব কথা লেখা হলেও আপনার জন্য কোনটি ভালো হবে, তা ঠিক করবেন আপনার চিকিৎসক। অনেক সময় অ্যাসপিরিন বা ক্লপিডোগ্রেল ওষুধ দেওয়া দরকার হতে পারে। তীব্র শীতে ‘কোল্ড অ্যালার্জির’রোগীদের হতে পারে নিউমোনিয়া। আপনি যদি সেপ্টেম্বরে ফ্লুয়ের টিকা, নিউমোনিয়ার টিকা নিয়ে থাকেন, তাহলে কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।
শীতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়, বিশেষ করে যাঁদের করোনারি আর্টারি ডিজিজ আছে। এ সময় শীত এড়াতে সম্ভব হলে ঘরে থাকার চেষ্টা করুন। হাত, পা, নাক, কান যেন ঠান্ডায় জমে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। হাত মোজা, পা মোজা, উলের কান–ঢাকা টুপি ব্যবহার করুন। যাঁদের হাতে বা পায়ে রক্ত সঞ্চালন কম হয়, এই শীতে তাঁদের রক্ত সঞ্চালন আরও কমে গিয়ে হাত বা পায়ের আঙুল সাদা বা নীল হয়ে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।
প্রথম ডিগ্রি ‘ফ্রস্ট বাইট’: ত্বকে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হয়।
দ্বিতীয় ডিগ্রি: ত্বকে ফোসকা পড়ে।
তৃতীয় ডিগ্রি: ত্বকের সব স্তর আক্রান্ত হয় ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চতুর্থ ডিগ্রি: যখন হাড় ও টেন্ডন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়।
কী করণীয়: ঠান্ডা থেকে রোগীকে দ্রুত সরাতে হবে। ঠান্ডা বা ভেজা কাপড় সরিয়ে গরম কাপড় পরান ও কম্বলের মধ্যে জড়িয়ে রাখুন। আস্তে আস্তে গরম করার জন্য রুম হিটার ব্যবহার করুন। আশপাশের পরিবেশ উষ্ণ করার ব্যবস্থা করুন। গরম পানীয় পান করান। হাত–পায়ে ব্যথা থাকলে, রক্ত সঞ্চালন কম হওয়ার মতো আঁটসাঁট কাপড় পরা থাকলে বা হাতে ঘড়ি, ব্রেসলেট, আংটি পরা থাকলে, তা পরিহার করুন। প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসাকেন্দ্রে যান ও সেবা গ্রহণ করুন। এই ঠান্ডায় সুস্থ থাকতে গরম পানীয় পান করান, ভিটামিন সি–যুক্ত ফল খাওয়ান। গরম পোশাক পরাতে হবে। ধূমপান পরিহার করতে হবে। হাত–পায়ের সমস্যা হচ্ছে কি না, লক্ষ করুন।
লেখক: ডা.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’