‘এই শীতে সাত দিনে এক দিন কাজ পায়েছি’
Published: 12th, January 2025 GMT
‘ভোরে আজান দেওয়ার সময় উঠেছি। রাতেই সাইকেলে কোদাল আর ডালি বাঁইধে রাখি। ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আসতি হয়। রাস্তায় আসতি আসতি মনে হয়, ফিরে যাই। এই শীতে সাত দিনে মাত্র এক দিন কাজ পায়েছি, বেটা।’
কাজেম আলী (৪৫) যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন রোদের দেখা মেলে প্রকৃতিতে। তবুও শীতের জামা খোলেননি তিনি। বললেন, ‘রাস্তায় আসতি আসতি যে শীত গায়ে ঢুকে যায়, তা এই রোদে আর যাবি না।’
আজ রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে কাজেম আলীর সঙ্গে রাজশাহী নগরের তালাইমারী মোড়ে কথা হয়। তিনি রোজ কাজের সন্ধানে শহরে আসেন পুঠিয়া উপজেলার জয়পুর গ্রাম থেকে।
তালাইমারীর মতো রাজশাহী নগরের বিনোদপুর, রেলগেট, বর্ণালি মোড়, কোর্ট স্টেশনসহ কয়েকটি এলাকায় কাকডাকা ভোরে গ্রাম থেকে শহরে কাজের সন্ধানে আসেন এই মানুষেরা। সাইকেল চালিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা এই শ্রমজীবী মানুষেরা সঙ্গ নিয়ে আসেন একটি ডালি আর কোদাল। সরকার পতনের পর শহরে কাজে একটু ভাটা পড়েছে। এই শীতে তা আরও কমে গেছে।
তালাইমারী মোড়ে কথা হয় রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামের মোতালেব আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গ্রামে কাজ নেই। ধান কাটাও শেষ হয়ে গেছে। আলু পেঁয়াজ লাগানোর কাজও প্রায় শেষ। শহরই এখন শেষ ভরসা। আমাদের তো আর জমিজমা নেই যে চাষ করে খাব।’ তিনিও সপ্তাহে এক দিন ৬০০ টাকার একটি কাজ পেয়েছিলেন বলে জানান।
একই গ্রামের মো.
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন রাজশাহীর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলে। দিনের বেলায় রোদ উঠলেও কনকনে ঠান্ডা বাতাসে শীতের তীব্রতা ছিল। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শুক্রবার ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে হয় ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ রোববার তা আবার কমে হয়েছে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, তাপমাত্রা একটু বেড়েছে। এটি আবার কমে যাবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মা সেতুতে সর্বমোট টোল আদায় ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় সর্বমোট টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৫৯ টাকা। আর ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে শনিবার পর্যন্ত পদ্মা সেতু হয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শেষ মুহূর্তের ঈদযাত্রায় পদ্মা সেতু অতিক্রম করে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার লাখ লাখ মানুষ। তবে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ নেই। কখনও কখনও একেবারেই ফাঁকা থাকছে টোল প্লাজা।
শনিবার পদ্মা সেতু দিয়ে ৩৬ হাজার ৯২৪ যান পারাপার হয়। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ৮ হাজার ৭৫০টি। টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার ২০০ টাকা।
এছাড়া শনিবার পর্যন্ত ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে পদ্মা সেতু হয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে টোল আদায় হয়েছে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা।
সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক আলতাফ হোসেন আরও জানান, লম্বা ছুটির কারণে এবার ঈদযাত্রায় চাপ অপেক্ষাকৃত কম। রোববার ভোরেও টোল প্লাজা ঘিরে যানবাহনের লম্বা লাইন ছিল। কিন্তু বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে থাকে।
টোল আদায়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, রাত পোহালেই ঈদ, কর্মজীবী ও ব্যবসায়ী অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। তাই রোববারও অস্থায়ী টোল বুথটি চালু রাখা হয়। এখন ৯টি লেনে টোল আদায় করা হচ্ছে। তবে অনেকেই গরম এবং যানজট এড়াতে সেহেরির পরপরই বেরিয়ে পড়েন। তাই সকালে কিছুটা চাপ থাকলেও বেলা গড়ানোর পর চাপ কমতে থাকে।
একই চিত্র দেখা গেছে জেলার অপর মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রামের পথেও। রোববার সকাল থেকে এ মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ১৩ কিলোমিটারে ছিল না কোনো যানজট।