ফুটবলের আরব্য রজনীতে নতুন এক গল্পের অপেক্ষা আজ
Published: 12th, January 2025 GMT
আরব্য রজনীতে সম্রাট শাহরিয়ারকে গল্প শোনাতেন শেহেরজাদ। বিচিত্র ধরনের সেই গল্পগুলো খুলে দিত কল্পনা–রাজ্যের অনেক দ্বার। একেকটি গল্প রুদ্ধশ্বাস ও তুমুল উত্তেজনায় ভরপুর। আরব্য রজনী ও শেহেরজাদের সেই গল্পগুলো অবশ্য আমরা পেছনে ফেলে এসেছি। দাওয়ায় বসে গল্প বলার সেই আয়েশি দিনও আর নেই।
কিন্তু এ সময়ে এসে মিম কিংবা জেন-জি প্রজন্মকে যদি নতুন করে আরব্য রজনীর গল্প বলা হয়, তবে কেমন হবে সেই গল্প? কেমন হবে তার চরিত্র ও উপখ্যানগুলো? ফুটবলের রোমাঞ্চকর গল্পগুলো নিশ্চয়ই সেখানে যোগ হবে। আর ফুটবল এলে নিশ্চিতভাবে আসবে ‘এল ক্লাসিকো’ও। রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার আগুনে গল্প ছাড়া এই রূপকথা তো অপূর্ণই!
আরও পড়ুনমরুর বুকে রিয়াল–বার্সার আরেকটি এল ক্লাসিকোর অপেক্ষা ১০ জানুয়ারি ২০২৫এই একটি ম্যাচেই যে লেখা হয়, আরব্য রজনীর সহস্র রাতের গল্প। যে গল্পে কুশীলব বদলাতে পারে কিন্তু গল্পের মর্যাদা ও উত্তাপ একটুও কমে না। প্রায় শত বছর ধরে ফুটবল বললে মানুষ রিয়াল-বার্সার এই দ্বৈরথগুলোকেই সব সময় ওপরের দিকে রেখেছে। জেদ্দায় আজ রাত একটায় সেই দ্বৈরথেরই আরও একটা পর্ব, স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনাল।
ম্যাচের সময় হিসাব করলে এল ক্লাসিকোর ইতিহাস ১২৩ বছরের পুরোনো। এই সময়ে অসংখ্য ধ্রুপদি ম্যাচ উপহার দিয়েছে দুই দল। দীর্ঘ পথচলায় উত্তেজনার অবশ্য রকমফের হয়েছে। আধিপত্যের রূপও বদলেছে। কখনো কখনো ধস নেমেছে জনপ্রিয়তাতে। কিন্তু এত কিছুর পরও এল ক্লাসিকো কখনো তার ধ্রুপদি মান হারায়নি।
এল ক্লাসিকোর ইতিহাস ১০০ বছরের বেশি পুরোনো হলেও এর জনপ্রিয়তা ও রোমাঞ্চ চূড়া স্পর্শ করেছে ১৯৫০–এর দশকে। স্পেন সে সময় অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ব্যাপক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। এক হিসাবে দেখা গেছে, ১৯৬৩ থেকে ১৯৭১–এর মধ্যে দেশটির মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হয়ে যায়।
ফাইনালে বার্সার তুরুপের তাস লামিনে ইয়ামাল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শুষ্ক চুলে প্রাণ ফেরাতে
‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা’– কবির এমন বাণী বলে দেয়, নারীর ঘন, কালো, লম্বা, নরম, পেলব, ঝলমলে চুল প্রশংসা কুড়িয়েছে যুগ যুগ ধরে। ঝলমলে সুকেশিনীতে সবার দৃষ্টি কাড়বে, এমন স্বপ্ন প্রায় সব বয়সী নারীর।
সুন্দর, ঝলমলে চুল সবার প্রত্যাশা হলেও সবার চুল একই রকম হয় না। কারও চুল সোজা, কারোর বা কোঁকড়ানো। কারোর নরম, কারোর রুক্ষ, শুষ্ক। কারোর ঘন কালো, কারোর রঙিন। বিভিন্ন ধরনের চুল সময়ের অভাবে, অযত্নে, আবহাওয়ার পরিবর্তনে, কেমিক্যালের প্রভাবসহ নানা কারণে হয়ে পড়ে নিষ্প্রাণ, ম্রিয়মাণ, শুষ্ক। তা দেখে তো শুধু মন খারাপ করে বসে থাকার উপায় নেই– কী করলে মিলবে সমাধান, আজ জানাব সেটিই।
চুল রুক্ষ বা শুষ্ক হয়ে গেছে সেটি বোঝার উপায় হলো চুল ফুলে থাকবে, চুলে প্রাণ থাকবে না, খসখসে দেখাবে ও ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে থাকবে। সহজে বুঝতে চাইলে চুল উড়তে থাকবে আর আগা ফাটতে থাকবে। চুল আঁচড়ানোর সময় প্লাস্টিকের চিরুনির আকর্ষণে ওপরের দিকে উঠে যাওয়াও শুষ্ক চুলের লক্ষণ। মূলত পুষ্টির অভাবে চুল শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। খাদ্যাভ্যাসের তারতম্যের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। সরাসরি সূর্যের তাপ, আবহাওয়া পরিবর্তন ও শরীরে পানির ঘাটতি হলে চুল হয়ে পড়ে ম্যাড়ম্যাড়ে। এ ছাড়া ভুলভাল শ্যাম্পুর ব্যবহারও হতে পারে শুষ্কতার কারণ। স্টাইলার, রোলার, স্ট্রেইটনার, হেয়ার সেটিং স্প্রে ইত্যাদির অতি ব্যবহারেও শখের কেশ যায় রুক্ষ হয়ে। এমনটাই জানাচ্ছিলেন বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের স্বত্বাধিকারী ও বিউটি কনসালট্যান্ট শারমিন কচি।
তিনি আরও জানান, শুষ্ক চুলকে সাময়িকভাবে মোলায়েম করতে চাইলে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে অথবা কন্ডিশনারযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। এগ প্রোটিন শ্যাম্পুর ব্যবহারেও দ্রুত চুলের শুষ্কতা দূর করা যায়। এমন চুলে যতবার শ্যাম্পু করা হবে ততবারই কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়া গোসলের পর সিরাম ব্যবহার করতে হবে। স্থায়ীভাবে চুলকে রুক্ষতার হাত থেকে বাঁচাতে চাইলে স্মুদিং ট্রিটমেন্ট, ক্যারাটিন ট্রিটমেন্ট, প্রোটিন ট্রিটমেন্ট, ডিপ শাইন ইত্যাদি ভালো মানের পার্লার থেকে করালে উপকার মিলবে। এ ছাড়াও চুলের মান, গন্ধ, উপাদান বুঝে বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা যায়। এমন মাস্ক সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহারে ভালো ফল মিলবে।
রুক্ষ চুলের ঘরোয়া যত্ন নিতে
হট অয়েল ট্রিটমেন্ট হেয়ার মাস্ক: ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে ‘হট অয়েল ট্রিটমেন্ট হেয়ার মাস্ক’ সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। এটি করার জন্য ৩-৪ (বাদাম তেল, জলপাই তেল, নারকেল তেল, জোজোবা তেল ইত্যাদি) ধরনের তেল নিয়ে তাতে ভিটামিন ই-ক্যাপ ও অল্প পরিমাণে টক দই মিশিয়ে লোশনের মতো পাতলা মিশ্রণ তৈরি করে মাথায় ও চুলে লাগিয়ে গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে মাথায় ৩ মিনিট করে পেঁচিয়ে রাখতে হবে ২-৩ বার। মাস্কটি বানিয়ে সপ্তাহে দু’দিন ব্যবহারে চুল হবে মোলায়েম, সিল্কি, পেলব।
ডিম, তেল ও মধুর মাস্ক: একটি ডিমের কুসুম থেকে ডিমের সাদা অংশ আলাদা করে নিন। ১ চা চামচ মধু ও ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। ভেজা চুলে খুব ভালো করে লাগিয়ে নিন। আঙুলের ডগায় ৫ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন এবং তারপর একটি গরম তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে নিন। ২০ মিনিট রেখে দিন মাথার ত্বককে তার পুষ্টি শোষণ করে নেওয়ার জন্য। এবার ভালো করে মাথা ধুয়ে নিয়ে আলতো করে মুছে নিন।
ডিম, কলা ও মধুর হেয়ারপ্যাক: কলা চুলের জন্য ময়েশ্চারাইজার হিসেবে দারুণ কাজ করে। আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ মধু নিয়মিত ব্যবহারে চুল দ্রুত লম্বা হয়। হেয়ারপ্যাকে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করলে বিবর্ণ চুল হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে। একটি কলা ভালোভাবে চটকে এর সঙ্গে একটা ডিম ফেটে আর খানিকটা মধু মিশিয়ে সবটা একসঙ্গে মেশাতে হবে। পুরো চুলে লাগানোর ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলে শ্যাম্পু করে নিন।
এভাবে মিলবে চুলের রুক্ষতা আর শুষ্কতার সমাধান। আর দেরি কেন? এবার যত্নের ছোঁয়ায় ঝলমলে চুল হয়ে উঠবে আপনারও।
মডেল: আলভি; ছবি: মঞ্জু আলম