বৃহত্তর খুলনার প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি ব্রজলাল কলেজ
Published: 12th, January 2025 GMT
সারি সারি আমগাছের মাথায় এসে পড়েছে শীতের নরম রোদ। বিশাল মাঠের সবুজ ঘাসগুলোতে হলদেটে ভাব। মাঠেই শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট জটলা। চলছে হাসাহাসি, কথা, গল্প আর খুনসুটি। এককোনায় কেক কেটে বন্ধুর জন্মদিন উদ্যাপন করছে একটা দল।
৭ জানুয়ারি দুপুরে খুলনার সরকারি ব্রজলাল কলেজমাঠের কয়েকটি খণ্ডচিত্র। মাঠের পাশ দিয়ে শহীদ মিনারের পাশের বকুল চত্বরের দিকে চলে যাই আমরা। এদিকটায় কলেজের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কর্মীদের আড্ডা আর অনুশীলনকেন্দ্র। একটি কক্ষে আবৃত্তি দলের কর্মীরা উচ্চারণ অনুশীলন করছেন। পাশের কক্ষে যুক্তি আর পাল্টা যুক্তি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে চলছে বিতর্কের মহড়া। অংশ নিয়েছেন ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা। ২০১২ সালে তৈরি হওয়া এই ডিবেটিং ক্লাব শিক্ষার্থীদের বিতর্কচর্চাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রবি, মঙ্গল আর বৃহস্পতি—সপ্তাহে তিন দিন হয় বিতর্ক অনুশীলন। সোমবার পাঠচক্র।
ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইলমী জানালেন, ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যসংখ্যা এখন ১০০ জনের ওপর। জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ভালো করার পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা আয়োজনের অভিজ্ঞতাও তাঁদের আছে। চলতি বছর একটি জাতীয় ও একটি আঞ্চলিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা।
বিএল ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানকার অনেক শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ক্ষেত্রে বিখ্যাত হয়েছেন। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এই কলেজের অনেক অবদান। পদ্মার এপারে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। সেই অভাব বিএল কলেজ পূরণ করেছে। বিশেষ করে বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের উচ্চশিক্ষার জন্য এর কোনো বিকল্প ছিল না।উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এফ এম আবদুর রাজ্জাকআরও পড়ুনপাবনার এই একটি কলেজ থেকেই ৫০ জন সুযোগ পেয়েছেন মেডিকেলে০৩ মার্চ ২০২৪মহড়া শেষে বিতর্ক দলের কয়েকজন গেলেন মাঠের দিকে। আমরাও প্রশাসনিক ভবনের সামনের দিক দিয়ে এগোতে থাকি। যোগ দিই শিক্ষার্থীদের এক আড্ডায়। দলটির সবাই ভূগোল বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁদের একজন দেবজ্যোতি হালদার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে বিএল কলেজের অনেক নামডাক শুনেছি। আট মাস হলো ভর্তি হয়েছি। ডুমুরিয়ার শাহপুরের দিকে আমার বাড়ি। কলেজ বাসে করেই যাওয়া–আসা করি। কলেজে পড়ালেখার পরিবেশ খুব ভালো। এরই মধ্যে রাখাইনদের জীবন-জীবিকা নিয়ে একটা জরিপের জন্য আমরা ৫৫ জনের একটা দল কুয়াকাটা ঘুরে এসেছি।’
সপ্তাহে তিন দিন হয় বিতর্ক অনুশীলন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনকে ‘বলিউডি রোমান্টিক কমেডি’ বলল প্রেস উইং
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রতিবেদনের বাস্তবতার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই; এটি শুধুই একটি বলিউডি রোমান্টিক কমেডি।
শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টস ফেসবুকে তাদের ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে লিখেছে- ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলিউডের রোমান্টিক কমেডির চেয়েও বাস্তবতার সাথে কম মিল রয়েছে।’
প্রেস উইং ফ্যাক্টস আরও বলেছে, ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তথাকথিত ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ কৌশল ব্যবহার করছে, যা দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রক্সি হিসেবে কাজ করা শেখ হাসিনাকে সমর্থন দেওয়া এবং বাংলাদেশের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে অসম্মান করার উদ্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের যে জনগণ ও প্রতিষ্ঠানগুলো গত জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে, তাকে টার্গেট করা হচ্ছে।
হাইব্রিড যুদ্ধের অংশ হিসেবে তথ্য পরিচালনা বা ‘অপতথ্য’ ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে লক্ষ্যবস্তুকে অভ্যন্তরীণ এবং তার স্বাভাবিক বন্ধু ও মিত্রদের থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়।
বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা সাধারণত একেবারে মনগড়া একটি গল্প দিয়ে শুরু হয়, যার কোনো বাস্তব ভিত্তি বা প্রমাণ থাকে না, বরং নামহীন ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি দিয়ে বানানো হয় এবং তা বন্ধুত্বপূর্ণ বা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
প্রেস উইং ফ্যাক্টস উল্লেখ করে-‘যদি গল্পটি যথেষ্ট চটকদার হয়, তাহলে অন্যান্য সংবাদমাধ্যম এটি তুলে নেবে এবং প্রচারের ফলে এটি বিশ্বাসযোগ্যতা পাবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একপর্যায়ে, যারা বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান কিন্তু বিশদ বিশ্লেষণের সময় পান না, তারাও এই গল্পটি সত্য বলে বিশ্বাস করতে পারেন, যা মূলত একজন প্রোপাগান্ডাবিদের কল্পনাপ্রসূত ধারণা ছাড়া আর কিছুই না।’
ফ্যাক্টস আরও উল্লেখ করেছে, মিথ্যা প্রচারণা ও অপতথ্যে বিশ্বাস করে মানুষ যখন যার বিরুদ্ধে প্রচার হচ্ছে, তাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে পদক্ষেপ নিতে শুরু করে, তখন তা পুরোপুরি সফল হয়।
এই ক্ষেত্রে, প্রতিপক্ষ হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ ও তাদের নিজস্ব সার্বভৌম রাষ্ট্র পরিচালনার আকাঙ্ক্ষা। আর স্বেচ্ছায় এই মিথ্যা প্রচারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে আনন্দবাজারের প্রতিবেদন বাস্তবতার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই; এটি শুধুই একটি বলিউডি রোমান্টিক কমেডি।
ফ্যাক্টস আনন্দবাজারের উদ্দেশে বলেছে, ‘আপনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি প্রকৃত সাংবাদিকতা করবেন, যেখানে সত্য ঘটনা অনুসন্ধান করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, নাকি মিথ্যা প্রচারণার অংশ হিসেবে মিথ্যা গল্প ছড়িয়ে একটি বন্ধুপ্রতীম দেশের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করবেন?’