৭ ম্যাচে ৮ গোলের পক্ষে ছিলাম, এক ম্যাচে ৮ গোল মানতে পারছি না
Published: 12th, January 2025 GMT
সালফোর্ড সিটিকে অনায়াসেই ছদ্মবেশী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বলে দেওয়া যায়। এই দলটির মালিকেরা ইউনাইটেডের সাবেক খেলোয়াড়, একজন তো ফুটবল ডিরেক্টরও। সেই দলটিই গতকাল রাতে এফএ কাপের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ৮-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে।
সালফোর্ড ম্যানচেস্টার সিটির কাছে এমন সময়ে ৮ গোল হজম করেছে, যার আগের ৬ ম্যাচে দলটির জালে কেউই বল পাঠাতে পারেনি। হতাশ সালফোর্ড কোচ তাই ম্যাচশেষে বলেছেন, কেউ যদি বলত ‘‘৭ ম্যাচে ৮ গোল হজম করো’’, সেটার পক্ষে ছিলাম। কিন্তু এক ম্যাচে ৮ গোল হজম মানতে পারছি না।
ইতিহাদে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে সিটির হয়ে গোল করেছেন ৫ জন। এর মধ্যে ৬২, ৭২ ও ৮১ মিনিটে ৩ গোল করেছেন জেমস ম্যাকাটি। সর্বশেষ দুই মৌসুম শেফিল্ডে ধারে থাকা এই উইঙ্গারের এটি ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক। এ ছাড়া জেরেমি ডকু দুটি (৮ ও ৬৯ মিনিট) এবং ডিবিন মুবামা (২০), নিকো ও’রেইলী (৪৩) ও জ্যাক গ্রিলিশ (৪৯) একটি করে গোল করেন। গ্রিলিশ ও ডকুর দ্বিতীয় গোলটি এসেছে পেনাল্টি থেকে।
মাঠে ডিরেক্টর বক্সে বসে খেলাটি দেখেছেন সালফোর্ড সিটির সহ-মালিক ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক খেলোয়াড় পল স্কোলস ও নিকি বাট। আরেক মালিক রায়ান গিগস টেকনিক্যাল এরিয়ায় ছিলেন ফুটবল ডিরেক্টর হিসেবে। এই তিনজন ছাড়াও সালফোর্ডের মালিকানায় আছেন ইউনাইটেডের সাবেক ফুটবলার গ্যারি নেভিল, ফিল নেভিল ও ডেভিড বেকহাম।
ম্যাচের পর সালফোর্ড কোচ কার্ল রবিনসন পেপ গার্দিওলার দলের প্রশংসা করে বলেন, ‘ম্যানচেস্টার সিটি পেপ কখনো কাউকে অসম্মান করে না। আজ তারা দেখিয়েছে, কেন তারা সিটি, কেন তারা এ পর্যায়ে।’ আগের ৬ ম্যাচে গোল হজম না করার প্রসঙ্গ টেনে রবিনসন যোগ করেন, ‘আমি তো খেলোয়াড়দের বলেছি, কেউ যদি আমাকে বলত যে ‘‘সাত ম্যাচ আট গোল হজম করো’’, আমি সেটার পক্ষে থাকতাম। কিন্তু এক ম্যাচেই ৮ গোল হজম করে ফেলাটা মানতে পারছি না।’
ম্যানচেস্টার সিটি ছাড়াও এফএ কাপের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে বড় জয় পেয়েছে চেলসি ও লিভারপুল। চেলসি ৫-০ গোলে হারিয়েছে মোরেকাম্বেকে, অ্যাকরিংটনের বিপক্ষে লিভারপুলের জয় ৪-০ ব্যবধানে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় জোড়া শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আশুলিয়ার জোড়া লাগানো শিশু সুমাইয়া ও খাদিজার মৃত্যুর অভিযোগ তুলে দোষীদের বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আশুলিয়ার জিরানীবাজার এলাকায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন শিশু দুটির বাবা-মা।
সংবাদ সম্মেলনে শিশু দুটির বাবা মো. সেলিম জানান, ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর সাভারের একটি ক্লিনিকে জোড়া লাগানো অবস্থায় তাঁর দুটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে দীর্ঘদিন রাখা হয় তাদের। পরে ঢাকা শিশু হাসপাতালে এক বছর এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ মাস রেখে চিকিৎসা করানো হয়। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কুড়িগ্রামের জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাবার সফল অস্ত্রোপচার হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে গত বছরের ৬ এপ্রিল তাঁর দুই শিশুকেও ওই হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক এ কে এম জাহিদ হোসেনের অধীনে ভর্তি করেন। তাঁর দুই শিশুর কোমরের মাঝখানে ইনফেকশন ছিল, যা ওষুধে নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দীর্ঘ আট মাস পরে কোমরে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু দেরি হওয়ায় তাদের দু’জনেরই ব্লাড ক্যান্সার হয়ে যায়। গত ৩১ মার্চ তারা মারা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিম বলেন, গত বছরের ১৬ এপ্রিল হাসপাতালের এক অফিস আদেশে জোড়া লাগানো শিশু দুটির বিষয়টি একাডেমিক ও গবেষণাভিত্তিক হওয়ায় কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে রোগীর কেবিন ভাড়া মওকুফ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধপত্র বিনামূল্যে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থানের পর বর্তমানে হাসপাতালের দায়িত্বরত ভিসি শাহিনুল আলম এবং পরিচালক আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন আগের সেই আদেশ মেনে নেননি। যে কারণে চিকিৎসা বাবদ প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ করেও তারা দুই সন্তানকে বাঁচাতে পারেনি। হাসপাতালের ভিসি ও পরিচালকের অবহেলার কারণেই তাদের দুই সন্তানকে হারাতে হয়েছে। তাই বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে হাসপাতালটির বর্তমান ভিসি ও পরিচালকের অবহেলার জন্য উপযুক্ত শাস্তি এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শাহিনুল আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।
সংবাদ সম্মেলনে শিশু দুটির মা সাথী আক্তার উপস্থিত ছিলেন।