ইয়েমেন, লেবানন ও গাজায় একযোগে ইসরায়েলি হামলা
Published: 11th, January 2025 GMT
ইয়েমেন, লেবানন ও ফিলিস্তিনের গাজায় একযোগে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাত থেকে এসব হামলা শুরু হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিসরে হামলা হয়েছে ইয়েমেনে। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আবারও লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল হামলাও অব্যাহত রয়েছে।
ইয়েমেনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের অবস্থান নিশানা করে শুক্রবার বিমান ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। এর মধ্যে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও একটি সমুদ্রবন্দরও রয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ইসরায়েলের অবস্থান নিশানা করে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে পাল্টা এসব হামলা চালিয়েছে তারা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, ইয়েমেনে ২০টির বেশি যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন তাঁরা।
ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ইয়েমেনে একের পর এক পাশবিক হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। নজিরবিহীন এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে তেহরান।
এদিকে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর একটি অস্ত্রের ট্রাক নিশানা করে এ হামলা চালায় তারা।
লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, উপকূলীয় শহর টায়ারের টাইর ডিবা নামক এলাকায় একটি গাড়ি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, ড্রোনটি এসে একটি রকেট লঞ্চারে আঘাত হানে। এ সময় একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
গতকাল বিকেলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল বিকেল থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটির অন্তত ৪৬ হাজার ৫৩৭ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার রাতভর গাজাজুড়ে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। বেশির ভাগ হামলা হয়েছে আবাসিক এলাকায়। বিশেষ করে গাজার উত্তর অংশে বেশি হামলা হয়েছে। বিমান হামলার পাশাপাশি গাজার বিভিন্ন স্থানে স্থলপথে হামলা চালান ইসরায়েলি সেনারা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার দমনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ইতালি’
অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতালি সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।
সাক্ষাতে আসন্ন ৫-৬ মে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফর, অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ, নিরাপত্তা খাতে পারস্পরিক সহায়তা; পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইতালি বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু।” তিনি উল্লেখ করেন, ইতালিতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী কর্মরত আছেন, যারা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে এই সংখ্যাটি আরো বাড়বে এবং দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।
রাষ্ট্রদূত জানান, সফরকালে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক ও প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হবে এবং একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে উভয় দেশের সম্মতিক্রমে অবৈধ অভিবাসন রোধ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন এবং পুলিশ বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে ঘোষণা, সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বৈধ চ্যানেলে জনশক্তি রপ্তানিতে আগ্রহী। আমরা অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে এবং যারা দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) মো. শামীম খান, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জসীম উদ্দিন খান এবং ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের অভিবাসন সংযুক্ত কর্মকর্তা জিউসেপ্পে দি জিওভান্নি উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ