যুক্তরাষ্ট্রে পশ্চিমে দাবানল, দক্ষিণে তুষার
Published: 11th, January 2025 GMT
ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলের অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। পাঁচ দিনেও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অনাবৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসে আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। দেশটির দক্ষিণে ঠিক বিপরীত চিত্র। সেখানে উষ্ণ হিসেবে পরিচিত অনেক অঙ্গরাজ্যে এখনো কনকনে শীত, চলছে তুষারপাত।
প্রতিবছরে সেপ্টেম্বর থেকে মে পর্যন্ত ঠান্ডা মাসগুলোতে ক্যালিফোর্নিয়ার ওপর দিয়ে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যায়। সান্তা আনা নামের এই বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত ওঠে। কমিয়ে দেয় বাতাসের আর্দ্রতা। এ কারণে আগেও অঙ্গরাজ্যটিতে দাবানল হয়েছে। তবে এবার আরেকটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে অনাবৃষ্টি। গত মে মাস থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসে মাত্র শূন্য দশমিক ৩ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
মূলত ঝড়ো বাতাস এবং অনাবৃষ্টিই লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলকে এতটা ভয়াবহ করে তুলেছে। গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সেখানে দাবানলের কারণে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আগুনে পুড়ে গেছে ১০ হাজারের বেশি অবকাঠামো। শুক্রবার পর্যন্ত দাবানলে ১৫০ বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতির তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া বিষয়ক তথ্য সরবরাহকারী ওয়েবসাইট অ্যাকুওয়েদার।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে ছয় দাবানল জ্বলছে। তবে কয়েকটি দাবানল অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। দাবানল থেকে বাঁচতে এরই মধ্যে লক্ষাধিক মানুষ শহরটি ছেড়েছেন। এখন শহরের পশ্চিম দিকে সান্তা মোনিকা থেকে মালিবু এলাকা পর্যন্ত জ্বলতে থাকা ‘প্যালিসেইডস’ দাবানল থেকে বাঁচতে সেখানকার মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে সরে যেতে বলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার থেকে দিক পরিবর্তন করতে শুরু করেছে দাবানল। দাবানল এখন আরও পূর্ব থেকে উত্তর–পূর্ব দিকে ধাবিত হচ্ছে। একই সঙ্গে এখনো ছয়টি দাবানল জ্বলছে।
এদিকে দাবানল নিয়ে নতুন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল শনিবার দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, লস অ্যাঞ্জেলেসের এই দাবানল একেবারে নজিরবিহীন। যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় আগুন ছড়িয়ে পড়া আংশিক ঠেকানো গেছে। তবে আগামী সপ্তাহের শুরু পর্যন্ত ঝড়ো বাতাস থাকতে পারে। এই দাবানলের সঙ্গে লড়াই করতে ক্যালিফোর্নিয়ার কাছে যেন সম্ভাব্য সবকিছু থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে।
দাবানলের পেছনে কী
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফায়ার প্রটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, দাবানলের সূত্রপাত হওয়ার ক্ষেত্রে বড় একটি কারণ হলো বজ্রপাত। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার আগুনের ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়নি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলের শুরু হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির পূর্ব দিক থেকে। সেখানকার প্যালিসেইডস এলাকা বা ইটনের দাবানলকবলিত এলাকার আশপাশে বজ্রপাত হয়েছে বলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এরপর আরও দুটি সাধারণ কারণের প্রসঙ্গ চলে আসে। এর একটি হলো ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া এবং বিদ্যুতের লাইনে স্ফুলিঙ্গ হওয়া।
বিদ্যুতের পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানি সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া এডিসন শুক্রবার পাসাডেনার নিকটবর্তী ইটন এলাকার দাবানল নিয়ে সিপিইউসিতে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তারা বলছে, ওই দাবানলের সূত্রপাত হওয়ার সঙ্গে তাদের কোনো সরঞ্জামের যোগসূত্র থাকার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে বিমা কোম্পানির আইনজীবীদের কাছ থেকে প্রমাণ সংরক্ষণের নোটিশ পাওয়ার পর সতর্কতামূলকভাবে তারা প্রতিবেদনটি দিয়েছে।
বজ্রপাত, অগ্নিসংযোগ, বিদ্যুতের লাইন ছাড়াও অনেক সময় আবর্জনা পোড়ানো এবং আতশবাজি ফুটানো থেকেও দাবানলের সূত্রপাত হতে পারে। তা ছাড়া দুর্ঘটনায় অসংখ্য উৎস থেকেই আগুন ছড়াতে পারে।
১৯৯১ সালে অকল্যান্ড হিলসের দাবানলসহ ক্যালিফোর্নিয়ায় বড় বড় দাবানলের ঘটনায় তদন্ত করার অভিজ্ঞতা আছে জন লেন্টিনির। ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের সায়েন্টিফিক ফায়ার অ্যানালিসিসের স্বত্বাধিকারী তিনি। লেন্টিনি বলেন, ‘এটা একসময় ছোট আকারের দাবানল ছিল। কোথায় দাবানলের শুরুটা হয়েছে, দাবানলের উৎস কী, তা নির্ধারণ, উৎসের আশপাশ খতিয়ে দেখা এবং এর কারণ নির্ধারণের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এ পরিস্থিতির পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি যুক্ত আছে কি না, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।
দক্ষিণে ঠান্ডা–তুষারপাত
পশ্চিমে যখন দাবানল, তখন দক্ষিণ ও মধ্যপশ্চিমে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক আবহাওয়া। সাধারণত উষ্ণ হিসেবে পরিচিত নিউ মেক্সিকো, জর্জিয়া ও টেক্সাসসহ দক্ষিণের অঙ্গরাজ্যগুলোয় চলছে তুষারপাত ও বৃষ্টি। তাপমাত্রা নেমে গেছে হিমাঙ্কের নিচে। সেখানে ঠান্ডা বাতাসের সঙ্গে মেক্সিকো উপসাগর থেকে বয়ে আসা বাতাস মিলে সৃষ্টি হওয়া ঝড় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
জর্জিয়ার আটলান্টায় তুষারঝড়ে কয়েক ইঞ্চি পুরু তুষার জমে। ১০ জানুয়ারি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আমাদের আত্মা শুদ্ধ করতে হবে, ঈমান ঠিক করতে হবে : মাজেদুল
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম বলেছেন, আমরা অনেকেই নামাজ পড়ি, কিন্তুু সুদখাই, আমরা নামাজ পড়ি ঘুষখাই, আমরা নামাজ পড়ি নেশার সাথে জড়িত, আমরা নামাজ পড়ি মাদক ব্যবসা করি, আমরা নামাজ পড়ি আবার অন্যেও হক মেরে খাই, আমরা দুর্বল মানুষের উপর জুলুম করি, আমি মনে করি আমাদের এই নামাজ কোন কাজে আসবে না।
আগে আমাদের আত্মাশুদ্ধ করতে হবে, ঈমান ঠিক করতে হবে। আমার মনের ভিতরে এমন বাসনা আনতে হবে যে আমি নামাজ পড়বো মানুষের হক মেরে খাবোনা, আমি নামাজ পড়বো সুদ খাবোনা, আমি নামাজ পড়বো ঘুষ খাবোনা, আমি দুর্বলের উপর জুলুম করবোনা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি দক্ষিনপাড়া যুব ও কিশোর সংঘের উদ্যোগে কবরবাসীদের রুহের মাগফেরাত কামনায় ১৫তম বার্ষিক ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, আজকে আমারা এখান থেকে ওয়াজ শুনে গেলাম জামাতের সাথে ফজর নামাজ পড়লাম না, তাহলে এই ওয়াজ শুনে আমাদের কোন ফয়দা হবে না। আমরা এখানে এসেছি শিখতে, আমরা এখান থেকে শিখবো এবং তা পালন করবো। আমি জানি এই এলাকায় অনেকেই অসহায়দের উপর জুলুম করে, অনেকেই মাদক ব্যবসা করে।
আল্লাহতালা যদি আমাকে কোনদিন সুযোগদেন আমি কিন্তুু আপনাদের ছাড়বো না, নেশার সাথে আমি কোন আপোষ করবোনা। নেশার ব্যবসা যারা করে তাদের সাথে আমি কোন আপোষ করবোনা, তাদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না। আমি যতোদিন বেচে থাকবো আপনাদের সেবা করে যাবো, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যতোদিন বেচে থাকবো এলাকার উন্নয়নে কাজ করবো।
বাইতুল আমান জামে মসজিদের সভাপতি হাজী বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে ওয়াজ করেন মাওলানা গাজী সোলাইমান আল-কাদরী। বিশেষ বক্তা হিসেবে ওয়াজ করেন হযরত মাওলানা মুফতি বেলাল আহমদ ও হাফেজ মাওলানা মুফতি মোঃ আমানুল্লাহ।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাইতুল আতিক জামে মসজিদের সভাপতি মোঃ ওমর আলী, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এড্যাঃ মাসুদুজ্জামান মন্টু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক কামরুল হাসান শরীফ, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি শাহজাহান, হাজী নুরুল ইসলাম ও লোকমান হোসেন প্রমূখ। মাহফিল পরিচালনা করেন মাওলানা মিজানুর রহমান।