মাঠ থেকে আগেই কাটা হয়েছে ফসল। ধু ধু মাঠে হিম হিম শীত উপেক্ষা করে হাজারো দর্শকের ঢল নামে। সবার দৃষ্টি মাঠে। নির্দিষ্ট পথে খুরের আওয়াজ তুলে প্রাণপণে ছুটছে ১৬টি ঘোড়া। কে কাকে টেক্কা দিয়ে সামনে যেতে পারে, চলে সেই লড়াই। হর্ষধ্বনি আর উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখর পুরো মাঠ।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চর ডোমকান্দি মাঠে বসা চার দিনব্যাপী পৌষ মেলায় প্রধান আকর্ষণ ছিল গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় উৎসব। শনিবার মেলার শেষ দিনে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় ‘ক’ বিভাগে সিরাজগঞ্জের ‘অ্যারাবিয়ান হর্সের’ ঘোড়সওয়ার ইমরান হোসেন ও ‘খ’ বিভাগে বগুড়ার ধুনট উপজেলার খাটিয়ামারির ‘আল্লাহর দানের’ ঘোড়সওয়ার ফরহাদ হোসেন চ্যাম্পিয়ন হয়।

পৌষ মেলা উপলক্ষে আশপাশের অর্ধশত গ্রামে উৎসব আমেজ বিরাজ করে। মেলা উপলক্ষে মেয়ে জামাই ও আত্মীয়স্বজনকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়। আজকের ঘোড়দৌড় দেখতে মাঠে হাজারো মানুষের ঢল নামে। ঘোড়সওয়ারদের রণকৌশল আর ঘোড়ার খুরের টগবগ শব্দ উপভোগ করেন হাজারো দর্শক। চর ডোমকান্দি গ্রামের তরুণসমাজ আয়োজিত এ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ‘অ্যারাবিয়ান হর্স’, ‘আল্লাহর দান’, ‘সালমান রাজ’, ‘কাটিং মাস্টার’, ‘আল্লাহ ভরসা’, ‘রাহিম টুয়েন্টি ফোর’, ‘অমিদ্র সুজন’, ‘মহাজন’, ‘সুজন অগ্নি’, ‘হঠাৎ আক্রমণ’, ‘শাহ জালাল’, ‘বিজলী রানী’, ‘কিং কোবরা’, ‘নাগরাজ’সহ ১৬টি ঘোড়া।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বেলা তিনটায় ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এর আগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও আশপাশের গ্রাম থেকে মাঠে আসতে শুরু করেন দর্শকেরা। খেলা শুরুর আগেই চর ডোমকান্দি ফসলি মাঠ ভরে যায়। ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হলে দর্শকের করতালিতে মুখর হয় চারপাশ। প্রতিযোগিতা শেষ হয় সন্ধ্যা ছয়টায়।

প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ঘোড়সওয়ার ইমরান হোসেনকে রেফ্রিজারেটর এবং ফরহাদ হোসেনকে ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন পুরস্কার দেওয়া হয়। ইমরান হোসেন বলেন, ‘এক যুগ ধরে ঘোড়দৌড়ে অংশ নিচ্ছি। কোথাও ঘোড়দৌড়ের খবর পেলেই সেখানে ছুটে যাই।’

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী এরফানুর রহমান। স্থানীয় সমাজসেবক আবদুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাজাত হোসেন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারাজুল ইসলাম, এম রুবেল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মেলা কমিটির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ বলেন, পৌষ মেলা উপলক্ষে আশপাশের প্রতিটি গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে আত্মীয়স্বজন নিমন্ত্রণ খেতে আসে। ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা মেলার প্রধান আকর্ষণ। এ উপলক্ষে গ্রামজুড়ে আনন্দের বন্যা বইছে। প্রতিটি বাড়িতে মেয়ে-জামাতা ও অতিথিদের মাছ মাংস, মিঠাই-মিষ্টান্ন, শীতের পিঠা-পুলি ও পায়েস দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফেব্রুয়ারি থেকে বিশেষ ওএমএসের চাল বিক্রি শুরু

পবিত্র রমজান উপলক্ষে তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের ৮৪৮টি কেন্দ্রে খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রি হবে। 

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানায় খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, রমজান উপলক্ষে উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আয়ের মানুষের সুলভ মূল্যে চালপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আগামী ফেব্রুয়ারি থেকেই এই কার্যক্রম শুরু হবে। ৬১টি জেলার ৪০১টি উপজেলায় প্রতিদিন তিন মেট্রিক টন করে এবং তিনটি পার্বত্য জেলার ২৩টি উপজেলায় এক মেট্রিক টন করে মোট ৪২৪টি উপজেলার ৮৪৮টি কেন্দ্রে ওএমএসের মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ইমদাদ ইসলাম বলেন, ‘‘ওএমএস (সাধারণ) কর্মসূচির আওতায় ঢাকা মহানগর, জেলা সদর পৌরসভা, ৮টি সিটি কর্পোরেশন ও শ্রমঘন ৪টি (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুর) জেলার ৯০৬টি কেন্দ্রে দৈনিক ১ টন করে ৯০৭ মেট্রিক টন (সচিবালয় কেন্দ্রে দৈনিক ২ মে. টন) করে চাল বিক্রি করা হবে।’’

জনপ্রতি পাঁচ কেজি চাল প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
  • ‘স্বপ্ন’ গুলশান-১ শাখার দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
  • ইজতেমায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র‌্যাব
  • ইজ‌তেমা উপলক্ষে চলবে বি‌শেষ ট্রেন
  • ভারতে কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে ৪০ জনের মৃত্যু
  • মধ্যরাতে শুরু খোকসার ঐতিহ্যবাহী কালীপূজা
  • ইজতেমার মাঠ প্রস্তুত, মুসল্লিরা আসবেন আজ থেকে
  • রমজান উপলক্ষে ফেব্রুয়ারি থেকে ওএমএসের চাল বিক্রি
  • ফেব্রুয়ারি থেকে বিশেষ ওএমএসের চাল বিক্রি শুরু