বাস্তবসম্মত আর্থিক সংস্কারের জন্য দরকার দক্ষ মানবসম্পদ। সেই মানবসম্পদ তৈরিতে ফিন্যান্স বিভাগের ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এ কথা বলেন। আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দিনব্যাপী আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গভর্নরের পাশাপাশি বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ। আর সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

ফিন্যান্স বিভাগ এবং ফিন্যান্স অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ এই আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান এইচ এম মোশারফ হোসেন। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। তবে একটি বাণী পাঠিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন এবং ফিন্যান্স অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদ ওসমান ইমাম পাঁচ দশকে বিভাগের সাফল্যের তথ্য তুলে ধরেন।

মেধা দিয়ে দেশ গড়ার জন্য ফিন্যান্স বিভাগের সব শিক্ষার্থীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, প্রতিযোগিতামূলক ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ আর্থিক বাজার এবং পুঁজিবাজারে প্রশিক্ষিত পারদর্শী কর্মী বাহিনী জোগান দেওয়ার অন্যতম উৎস হচ্ছে এই বিভাগ।

অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, ‘ফিন্যান্স বিভাগের ৫০ বছর একটা অর্থবহ মিলনমেলা। আমি জানি, অ্যালামনাইরা অনেক বড় কাজ করতে পারে। যেমন বড় তহবিলের উৎস হচ্ছে হার্ভার্ড অ্যালামনাই তহবিল, ভারতীয় আইআইটি অ্যালামনাই তহবিল ইত্যাদি। ভবিষ্যতে ফিন্যান্স অ্যালামনাইরাও আন্তসম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে অনেক বড় কাজ করতে পারবে বলে বিশ্বাস করি।’

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ তাঁর বাণীতে বলেন, দেশের চলমান আর্থিক খাতের সংস্কারে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা চালিকাশক্তির ভূমিকায় রয়েছেন। আর্থিক খাতের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পাশাপাশি স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ব্যবসায় শিক্ষার উৎকর্ষের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ের মধ্যে আরও বেশি সহযোগিতামূলক পদক্ষেপের প্রতি গুরুত্ব তুলে ধরেন।

ফিন্যান্স অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন ধারণা এবং উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীসহ তিন হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীদের র‍্যালি দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আয়োজনে ছিল সংগীতানুষ্ঠানও।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আবার কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে গুগল, এবার এইচআর এবং ক্লাউডে

কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল। এআই প্রযুক্তির উন্নয়নে ব্যাপক অর্থ বরাদ্দ করেছে তারা। গুগল ‘পিপল অপারেশনস’ এবং ক্লাউড সংস্থাগুলোর কর্মীদের গত সপ্তাহে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে। অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে গুগল এ কাজ করতে যাচ্ছে। সিএনবিসি এক খবরে এসব তথ্য জানিয়েছে। গত বুধবার ব্লুমবার্গ গুগলের ক্লাউড বিভাগে কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা জানিয়েছে।

গত মঙ্গলবার গুগলের মানবসম্পদ বিভাগের (এইচআর) প্রধান ফিওনা সিকোনির জারি করা একটি স্মারক পেয়েছে সিএনবিসি। স্মারক অনুসারে, গুগল এই মার্চের শুরু থেকে পিপল অপারেশনস, গুগলের মানবসম্পদ বিভাগের মার্কিনভিত্তিক পূর্ণ সময়ের কর্মীদের চাকরি ছাড়ার অফার দেবে এবং এ জন্য ‘ভলান্টারি এক্সিট প্রোগ্রাম’ নামের একটি কর্মসূচিও তৈরি করেছে।

আরও পড়ুনপল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া নেবে ৫৪ জন২ ঘণ্টা আগে

অর্থ বিভাগের প্রধান আনাত আশকেনাজি বলেছেন, তাঁর শীর্ষ অগ্রাধিকারের মধ্যে একটি হচ্ছে ২০২৫ সালে গুগল এআই অবকাঠামোতে তার ব্যয় সম্প্রসারণ করবে। এর সঙ্গে অগ্রাধিকার আরও ব্যয় হ্রাস করা। ৩ ফেব্রুয়ারি কোম্পানি চতুর্থ ত্রৈমাসিকের আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গুগল প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। আশকেনাজি বলেন, গুগলের এআইয়ের জন্য তীব্র চাহিদা রয়েছে।
এইচআরের ওই স্মারক অনুযায়ী, লেভেল ৪ এবং লেভেল ৫-এর কর্মীরা ১৪ সপ্তাহের বেতন এবং কিছু সুবিধা পাবেন।

আরও পড়ুনআজ থেকে ৪০ দিনের ছুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে৬ ঘণ্টা আগে

গুগলের মুখপাত্র ব্র্যান্ডন অ্যাসবেরি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের বিভিন্ন দলকে আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার জন্য এবং দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যে নিশ্চিত করার জন্য পরিবর্তনগুলো অব্যাহত রাখতে হচ্ছে।’

এ বছরের জানুয়ারিতে গুগলের নির্বাহীরা বলেছিলেন, তাঁরা প্রত্যাশিত কাটছাঁটের আগে কোম্পানির ‘প্ল্যাটফর্ম এবং ডিভাইস’ ইউনিটের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কর্মীদের ছাটাইয়ে প্রস্তাব দেবেন। এ ইউনিটে ২৫ হাজারের বেশি পূর্ণকালীন কর্মচারী আছেন যাঁরা অ্যান্ড্রয়েড, ক্রোম, ক্রোমওএস, গুগল ফটোস, গুগল ওয়ান, পিক্সেল, ফিটবিট এবং নেস্টে কাজ করেন।

গত কয়েক বছরে গুগল একাধিকবার কর্মী ছাঁটাই করেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটি ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে, যা তাদের মোট কর্মী সংখ্যার ৬ শতাংশ। এই ছাঁটাইয়ের পেছনে ছিল খরচ কমানো এবং এআই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা।

আরও পড়ুনকারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, সংশোধিত পদ ৭৫১০১ মার্চ ২০২৫

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে গুগল আবার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়। ব্যবস্থাপক, পরিচালক ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদমর্যাদার কর্মীদের মধ্যে ১০ শতাংশ ছাঁটাই করা হয়। এ পদক্ষেপের পেছনে ছিল কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি ও খরচ কমানোর উদ্যোগ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবার কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে গুগল, এবার এইচআর এবং ক্লাউডে