রাজধানীর মিরপুর থেকে অপহরণের ৭ ঘণ্টা পর ব্যবসায়ী উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫
Published: 11th, January 2025 GMT
রাজধানীর শেওড়াপাড়া থেকে রাসেল খান নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ হওয়ার সাত ঘণ্টা পর গতকাল শুক্রবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে পাঁচজন।
মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদ রুমন আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ৯টার পর শেওড়াপাড়ার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। পুলিশ ওই বাসা থেকে নগদ ৭৫ হাজার টাকা, ৫টি মুঠোফোন, ১টি চাকুসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আলম হোসেন (৪০), মনির আহম্মেদ (৩৫), মো.
অপহরণের ঘটনায় ব্যবসায়ী রাসেল খান মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তিনি একজন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী। বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানা থেকে পোশাক কিনে তিনি তা বিক্রি করেন। ব্যবসায়িক সূত্রে এক নারীর (এজাহারভুক্ত) সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। গতকাল ওই নারী একটি পোশাক কারখানা থেকে পোশাক কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় আসতে বলেন। ওই নারীর কথামতো তিনি গতকাল বেলা ২টার দিকে পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় ইকবাল রোডের একটি বাসার সামনে আসেন এবং ওই নারীর সঙ্গে দেখা করেন।
একপর্যায়ে ওই নারীসহ ১৪-১৫ ব্যক্তি রাসেলকে মারধর করতে করতে ওই বাসার ছয়তলায় সুফিয়া নামের আরেক নারীর বাসায় নিয়ে আটকে রাখেন। এই সময় হামলাকারীরা রাসেলের কাছে থাকা নগদ ৩৫ হাজার টাকা, একটি মুঠোফোন এবং তাঁর মুঠোফোনের অনলাইন ব্যাংকিং থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, অপহরণকারীরা রাসেলের গলায় চাকু ঠেকিয়ে তাঁর কাছে ১০ লাখ চাঁদা দাবি করেন এবং ওই টাকা আনতে তাঁকে দিয়ে তাঁর মা-বাবা ও স্ত্রীকে ফোন করান। বিষয়টি রাসেল তাঁর এক বন্ধুকেও জানান। ওই বন্ধু ঘটনাটি মিরপুর মডেল থানায় জানালে পুলিশ গতকাল রাত ৯টার পর শেওড়াপাড়ার ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ী রাসেলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।
ব্যবসায়ী রাসেল খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অপহরণকারীদের হামলায় আমি গুরুতর আহত হয়েছি। আমার কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে।’
পুলিশ কর্মকর্তা সাজ্জাদ রুমন প্রথম আলোকে বলেন, নগদ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, মারধর করা এবং চাঁদা চাওয়ার ঘটনায় ব্যবসায়ী রাসেল খান গতকাল মধ্যরাতে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় তিনি আটজনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করেছেন। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১৫ জেলেকে অপহরণের অভিযোগ, আটক ৩ বনদস্যু
বঙ্গোপসাগরের চিসখালি নামক স্থানে ট্রালারসহ ১৫ জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যু মজনু বাহিনীর সদস্যরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় আশপাশে থাকা অন্য ট্রলারের জেলেরা এগিয়ে এসে একটি বন্দুক ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ তিন বনদস্যুকে আটক করে। পরে জব্দকৃত অস্ত্র এবং আটককৃতদের কোস্ট গার্ডের কাছে সোপর্দ করেন তারা।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে দুবলার চর ফিসারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গতকাল সোমবার রাতে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের মান্দরবাড়িয়ার চিসখালি নামক স্থানে মাছ ধরার সময় জেলেদের অপহরণের ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
বিএনপি মামলা বাণিজ্য শুরু করেছে: ইব্রাহীম মোল্লা
রূপগঞ্জে আড়ত দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬
আটক জলদস্যুরা হলেন- মাইজে ভাই হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীর হোসেন, শ্যামনগর উপজেলার আব্দুল আজিজের ছেলে রবিউল ইসলাম ও রহমত আলী। তারা তিনজন আত্মসমর্পণকারী বনদস্যু মজনুর দলের সদস্য।
দুবলার চর ফিসারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, “দুবলার চরের আলোকোল থেকে জেলেরা কয়েকটি ট্রালার নিয়ে মান্দরবাড়িয়ার বাহির সাগরের চিসখালি নামক স্থানে মাছ ধরতে যান। গতকাল রাতে বনদস্যু মজনু বাহিনীর ১০-১৫ জন সদস্য দুটি ট্রলারে এসে মাছধরা অবস্থায় জেলেদের ওপর হামলা চালায়। অস্ত্রের মুখে তারা ১৫ জেলেকে অপহরণ করে একটি ট্রলারে করে নিয়ে যায়।”
তিনি আরো বলেন, “এসময় আশপাশে থাকা মাছ ধরা অন্য ট্রলার এগিয়ে আসে। ওইসব ট্রলারের জেলেরা একটি বন্দুক ও ৩৬ রাউন্ড গুলিসহ তিন বনদস্যুকে আটক করে। পরে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক জলদস্যুদের সুন্দরবনের কোস্ট গার্ডের কাছে সোপর্দ করেন তারা। অপহৃত জেলেদের এখনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।”
শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবীর মোল্লা বলেন, “আটক বনদস্যুদের বাগেরহাটের মোংলা থানায় হস্তান্তর করেছে কোস্ট গার্ডে। এখনো অপহৃতদের পরিবার আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। কোস্ট গার্ড অপহৃতদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ