বান্দরবানে ৫৮ রোহিঙ্গা ও ৫ ‘পাচারকারী’ আটক
Published: 11th, January 2025 GMT
বান্দরবানের আলীকদম সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ৫৮ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বিজিবি। তাঁদের সঙ্গে আটক করা হয়েছে আলীকদমের স্থানীয় পাঁচ বাসিন্দাকে। বিজিবি জানিয়েছে, আটক স্থানীয় বাসিন্দারা পাচারকারী চক্রের সদস্য। আজ শনিবার ভোরে আলীকদমের নয়াপাড়া ইউনিয়নের বুসিরমুখ এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে। অভিযানে জব্দ করা হয়েছে একটি ট্রাক, একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল।
আটক স্থানীয় বাসিন্দারা হলেন উপজেলার দক্ষিণ নয়াপাড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৫), বাজারপাড়ার আবদুর রহিমের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৫), নয়াপাড়ার সোনা মিয়ার ছেলে জামাল উদ্দিন (২৭) ও মৃত আনু মিয়ার ছেলে খোরশেদ আলম (৫৭) এবং চৈক্ষ্যং এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আবু হুজাইফা (৩২)।
বিজিবি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি-৫৭ ব্যাটালিয়নের জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (জেসিও) মো.
বিজিবি ৫৭ ব্যাটালিয়নের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক রোহিঙ্গারা বলেছেন, তাঁরা আটক হওয়া আলীকদমের স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আটক ব্যক্তিদের আলীকদম থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর্জা জহির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা করা হচ্ছে। আটক স্থানীয় বাসিন্দাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। একই সঙ্গে পাচারের শিকার হিসেবে ওই মামলায় পাঁচ রোহিঙ্গাকেও আদালতে হাজির করা হবে। এই পাঁচ রোহিঙ্গার বিষয়ে আদালত করণীয় নির্ধারণ করবেন। অন্য রোহিঙ্গাদের নিয়ম অনুযায়ী সীমান্ত দিয়ে বিজিবির পুশব্যাক করার কথা রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।