শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকার যে অধ্যাদেশ জারি করেছে, তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এই মুহূর্তে টিসিবির ট্রাক সেল চালু করারও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির অবস্থান তুলে ধরেন সংগঠনটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। দেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিকল্প হিসেবে কয়েকটি প্রস্তাবও তুলে ধরেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

লিখিত বক্তব্যে আখতার হোসেন বলেন, সম্প্রতি সরকার রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটি অধ্যাদেশ জারি করেছে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি ও ব্যবসায়ের খরচ বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার তার রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য করের আওতা বাড়াবে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে যে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় এবং তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বিগত অবৈধ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই ভঙ্গুর ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। এ অবস্থায় বিগত অবৈধ সরকার আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যেকোনো দেশের জন্য আইএমএফের ঋণ হলো ঋণপ্রাপ্তির সর্বশেষ আশ্রয়। এই কঠিন ঋণের শর্ত হিসেবে কয়েকটি ধাপে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি এ অধ্যাদেশগুলো জারি করেছে। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকারের কাছে প্রশ্ন—অবৈধ সরকারের ঋণের এই শর্ত বর্তমান সরকার পুনর্বিবেচনার জন্য আইএমএফকে আহ্বান জানিয়েছে কি? তা স্পষ্ট নয়। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার একটি অবৈধ সরকারের চুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াতে পারে না।

প্রস্তাব

অবিলম্বে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক অধ্যাদেশ প্রত্যাহার ও টিসিবির ট্রাক সেল চালুর দাবির পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিকল্প হিসেবে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

আখতার হোসেন বলেন, সরকার এ ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে পারে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করবে না। প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকারকে অবশ্যই সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। বিদ্যমান করের কাঠামোয় যে সীমাহীন দুর্নীতি হয়, তা বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে রাজস্ব আয় বাড়বে বলে মনে করেন তাঁরা।

প্রস্তাবের মধ্যে আরও রয়েছে, বিগত সরকার ১৫ সময়ে বিদেশে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে বলে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে। সেগুলো দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গত ১৫ বছরে দেশের ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে ও খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ কোটি টাকার বেশি। এগুলো আদায়ের উদ্যোগ নিতে হবে। বিদ্যমান অর্থঋণ আদালত (২০০৩) সরকারকে দ্রুত ট্রাইব্যুনাল গঠন করার যাবতীয় আইনি সুযোগ দিয়েছে। সরকার এ সুযোগ ব্যবহার করে দ্রুত একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে খেলাপি অর্থ আদায় ও অনাদায়ে তাঁদের সম্পত্তি ক্রোক করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির আরও কয়েকজন নেতা বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খাদ্যে ভেজালকারীদের শাস্তি দাবি

খাদ্যে ভেজালকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ‘নিরাপদ খাদ্য চাই’ নামে একটি সংগঠন। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, খাদ্যে ভেজালকরীরা রাষ্ট্র ও জনগণের শত্রু। খাদ্যে ভেজালের কারণে প্রতিদিন অনেক মানুষের জীবন দিতে হচ্ছে। প্রতি বছর খাদ্যের বিষক্রিয়ার কারণে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া দেড় লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। দুই লাশ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, সবচেয়ে অনিরাপদ শিশুখাদ্য। বিভিন্ন ক্যামিকেল ও কাপড়ের রং দিয়ে শিশুখাদ্য তৈরি করা হচ্ছে। যা একটি শিশুর জীবন কেড়ে নিতে যথেষ্ট।

তারা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে খাদ্যে ভেজালকারীদের জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। এরপরও অসাধু ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার লোভে এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য খাদ্যে ভেজালকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাচ্চুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- মোরশেদ আলম, মামুন, ইউসুফ, তোফায়েল আহমেদ, সালাউদ্দিন, আবুল বাশার ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা রাজু প্রমুখ
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তরুণ আলেম প্রজন্ম ২৪–এর কার্যকরী পরিষদ গঠন
  • সমাজ বদলে শিক্ষার্থীদের ঐক্য-বন্ধন
  • বিভাজনের রাজনীতি নয়, ঐক্য ধরে রাখতে চায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ
  • অস্ত্রবিরতির ঘোষণা পিকেকের, থামছে ৪০ বছরের সংঘাত
  • দুর্নীতিগ্রস্ত ও দুর্বৃত্তদের নিষিদ্ধ করতে হবে: বদিউল আলম
  • ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উচিত সকালে ফাটাকেষ্ট মুভি দেখে বের হওয়া’
  • ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উচিৎ সকালে ফাটাকেষ্ট মুভি দেখে বের হওয়া’
  • খাদ্যে ভেজালকারীদের শাস্তি দাবি