৮ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পোষ্য কোটা নিয়ে প্রশ্ন, সংস্কারের দাবি
Published: 11th, January 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তান, স্ত্রী ও ভাই-বোনদের জন্য কোটা রয়েছে। পরীক্ষায় পাস করলেই পোষ্যরা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তির সুযোগ পান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যতজন আবেদন করেন, ততজনকেই ভর্তি করা হয়। এবার অবশ্য পোষ্য কোটায় প্রতি বিভাগে চারজনের বেশি ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। ফলে ৩৭টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সর্বোচ্চ ১৪৮ জন পোষ্য কোটায় ভর্তির সুযোগ পাবেন। বিগত পাঁচ বছরে পোষ্য কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সর্বনিম্ন ৫৩, সর্বোচ্চ ৫৯ জন ভর্তি হয়েছেন।
অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা থাকতেই হবে। পোষ্য কোটার ক্ষেত্রে আসন ও সম্পর্কের ধরন সীমিত করা যেতে পারে। ...একেবারে বাদ দেওয়া কঠিন হবে।আনু মুহাম্মদ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য
দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তিতে কোটা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। কোথাও কোথাও আন্দোলন হচ্ছে। বিশেষ করে পোষ্য কোটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন আন্দোলনকারীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ায় অবস্থিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়—এই আট বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে ১১ ধরনের কোটার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি সাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা রয়েছে। সাতটির মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি পোষ্য কোটা আন্দোলনের মুখে বাতিল ঘোষণা করা হয়। এখন পোষ্য কোটা ফেরাতে আন্দোলন করছেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।
পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যমজ বোনের ডেন্টালে ভর্তির সুযোগে আনন্দ, প্রথমবারের মতো আলাদা হওয়ার কষ্ট
টাঙ্গাইলের সখীপুরে যমজ বোন ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। গতকাল রোববার ডেন্টাল কলেজে বিডিএসে ভর্তি পরীক্ষার (২০২৪-২৫) ফলাফলে যমজ বোন উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এই দুই বোন হলেন সামিয়া জাহান ওরফে আফসানা ও সাদিয়া জাহান ওরফে শাহানা। সামিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে এবং সাদিয়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
এর আগে সখীপুরে আরেক শিক্ষক দম্পতির যমজ মেয়ে যারিন তাসনিম বুয়েটে এবং যাহরা তাসনিম মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।
আরও পড়ুনএক বোনের বুয়েটে আরেকজনের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ, প্রথমবার আলাদা হচ্ছেন তাঁরা০১ মার্চ ২০২৫সামিয়া ও সাদিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সখীপুর পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাহারতা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন মিয়া ও আফিয়া আক্তার দম্পতির যমজ মেয়ে সামিয়া ও সাদিয়া। এর আগে দুই বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন।
যমজ বোনদের বাবা আল আমিন আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ওরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হবে। তাঁর দুই মেয়ে টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ–৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এর আগে এসএসসি ও জেএসসিতে তাঁরা জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন।
সামিয়া জাহান ও সাদিয়া জাহান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা একসঙ্গে মায়ের পেটে ছিলেন। একসঙ্গে বড় হয়েছেন। এক বিছানায় ঘুমিয়েছেন। একই টেবিলে, একই বিদ্যালয়ে ও একই কলেজে পাশাপাশি বসে পড়াশোনা করেছেন। এখন স্বপ্নপূরণে ও ভবিষ্যৎ জীবন গড়তে দুজনকে দেশের দুই প্রান্তে চলে যেতে হবে। একজন আরেকজনকে ছেড়ে থাকবেন, ভাবতেই তাঁদের কষ্ট হচ্ছে।
বাবা আল আমিন মিয়া উপজেলার বড়চওনা-কুতুবপুর কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং জামায়াতে ইসলামীর সখীপুর উপজেলা শাখার আমির। মা আফিয়া আক্তার স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
সখীপুর পাইলট উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাইউম বলেন, ‘ওরা আমাদের বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ–৫ পেয়েছিল। ওরা আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। এবার ওই দুই বোন ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে শুনে খুব খুশি হয়েছি।’